১৫ই আগস্ট শোক দিবসের বক্তব্য বা ভাষণঃ আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমরা ১৫ আগস্ট শোক দিবসের বক্তব্য এবং ভাষণ সংক্ষিপ্ত করে লিখে দিব। এছাড়া ১৫ই আগস্ট সম্পর্কে বক্তব্যের পাশাপাশি ১৫ আগস্ট সম্পর্কে একটি অনুচ্ছেদ এবং একটি কবিতা দিব। তো শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
১৫ আগস্ট এর বক্তব্য ২০২৩
১৫ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সম্মানিত আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও ‘সুধীমন্ডলি আসসালামু আলাইকুম।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধায় তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
আজ শোকান ১৫ই আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস। বাঙালি জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর ও বিভীষিকাময় একটি দিন।
দেশি-বিদেশি নানা ষড়যন্ত্রে বাংলার ভাগ্যাকাশে আবারও নেমে আসলো দুর্যোগের ঘনঘটা। ১৫ই আগস্ট, তখনও ভোর হয়নি, আজানের ধ্বনিও উচ্চারিত হয়নি: ৩২ নং সড়কের ৬৭৭ নং বাড়িতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে ঘুমন্ত।
পরিকল্পনা মাফিক কিছু দুষক্রিতিকারী চক্র সামরিক আমলা, ক্ষমতালোভী চক্র বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে আক্রমণ চালায়। ঘাতকের দল ট্যাংক, কামান, মেশিনগানসহ অত্যাধুনিক মাড়াস্ত্র নিয়ে একযোগে তাঁর বাসভবন ল কার বৃষ্টির মাতা গুলি চূড়াত থাকে।
একে একে হত্যা করে পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে। নিষ্পাপ শিশু রাসেল ও রেহাই পায়নি। একডান ঘাতক রাসেলকে উপরতলা থেকে নিচে নিয়ে আসে। তার কাতর, বিল হয়ে পড়ে ৮ বছরের শিশু রাসেল।
মায়ের কাছে খাবারের জন্য কাঁদতে শুরু করে। কিন্তু ঘাতকের কাছে এই ছোট্ট শিশুর আকুতিতেও পাষাণ গলেনি বরং উপরে নিয়ে গুলি কার নির্মমভাবে হত্যা করে। এবার স্টেনগান থেকে বঙ্গবন্ধুর বুক লক্ষ করে গুলি করে ঘাতকের দল।
তাঁর বুক বিদীর্ণ করে ১৮টি গুলি। বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল, রোজি জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, কৃষকনেতা আবদূর রন, ঘুননেতা শেখ ফজলুল মনি ও তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, সুকান্ত বাবু, আরিফ, আব্দুল নঈম খান, রিন্টুসহ পরিবারের ১৮ জন সদস্যকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও সেই বিভীষিকাময় রাতে নিহত হন আরও ৮ জন। ৩২ নম্বর থেকে যেন সেই রক্তাস্রাত বাংলার সবুজ-শ্যামল কে রাঙিয়ে গড়িয়ে পড়ে বঙ্গপসাগরে।
প্রিয় সুধীবৃন্দ,
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ধূলিসাৎ করতে চেয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে আছি ফেলা যায় না: তাঁর অবদান জাতি কখনোই ভুলতে পারে না।
বাঙালি জাতির সমস্ত সত্তা জুড়ে বঙ্গবন্ধুর উপস্থিতি: বঙ্গবন্ধু শুধু ব্যক্তি নন: বঙ্গবন্ধু এক অনুপ্রেরণার নাম: তিনি স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির পিতা আমাদের ভাবনা- অনুভাবনায় প্রতিনিয়ত তাঁর দীপ্ত।
সম্মানিত সুধীমণ্ডলী,
জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় আমাকে কিছু বলার সুযোগদানের ডান উপস্থিত সকলকে এবং এরূপ মন্ত্রতী আয়োজনে সংশ্লিষ্ট সকলকে আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেষ করছি।
বাংলাদেশের জাতীয় শোক দিবস/ ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস সম্পর্কে অনুচ্ছেদ রচনা
জাতীয় শোক দিবস বাংলাদেশ ও স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার স্মরণে পালিত একটি জাতীয় দিবস। প্রতিবছরের ১৫ আগস্ট জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দিবসটি শোকের সাথে পালন করা হয়। এ দিবসে কালো পতাকা উত্তোলন ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনিমিত রাখা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তারিখে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেদিন তিনি ছাড়াও নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব।
এছাড়াও তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন। প্রতি বছর ১৫ আগস্ট জাতি গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সকল সদস্যদের, শোক দিবস। এদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বেসরকারি ভবনসহ বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোয় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। এছাড়া বনানীতে ১৫ আগস্ট নিহত শহীদদের কবরে শ্রদ্ধা জানানো হয়। টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতিহা পাঠ ও সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদানসহ বিশেষ মুনাজাত ও দোয়া মাহফিল হয় ৷
১৫ আগস্ট সম্পর্কে কবিতা
আপনারা অনেকেই ১৫ আগস্ট সম্পর্কে কবিতা খুঁজে থাকেন । তাই এখন আমি আবু জাফরের একটি কবিতা লিখে দিয়েছি। আশা করি কবিতাটি আপনাদের ভালো লাগবে। এছাড়া আপনার যদি অন্য কোন কবিতা চাই তাহলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।
শোকাবহ আগস্ট
জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,
বাঙালির হৃদয়ে পদ্মা মেঘনার মত বহমান ।
উনিশশো পচাত্তরের শোকাবহ আগস্ট মাস,
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ক’রে, কলঙ্কিত সে ইতিহাস ।
স্বাধীন বাংলায় ছিলো কোটি কোটি ভক্ত,
তবু নৃশংসভাবে ঝরালো তাঁর তাজা রক্ত ।
ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাড়ী,
এক মুহুর্তেই বানালো হায়েনারা মৃত্যুপুরী ।
সেদিনও ভোরের পাখি গেয়েছিলো গান,
মসজিদেও যথারীতি হয়েছিলো আযান ।
শিশু পুত্র ‘রাসেল’ আদরের নয়নের মনি,
নিরব পাথর পড়ে থাকলো সবার মরদেহ,
বঙ্গবন্ধুর হাতধরে তোলার রইলো না কেহ ।
হতবাক হলো দেশ স্তম্ভিত আকাশ বাতাস,
সৃষ্টি হলো বেদনার একটি নতুন ইতিহাস ।
গোটা বাঙ্গালীর চোখে শুধুই ছিলো কান্না,
সবার অন্তরে বয়েছিল দুঃখের প্রবল বন্যা ।
আজো তাঁহার জন্য কাঁদে বাঙালির হৃদয়,
জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে বিনম্র শ্রদ্ধায় ।
সম্মানিত পাঠক পাঠিকা আশা করি উপরে সম্পূর্ণ অংশ পড়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন। উপরে আমরা শোক দিবসের সংক্ষিপ্ত বক্তব্য আলোচনা করেছি। এবং ১৫ আগস্ট সম্পর্কে কবিতা দিয়েছি আবু জাফরের। এছাড়া ১৫ আগস্ট সম্পর্কে রচনা। ১৫ আগস্ট সম্পর্কে অনুচ্ছেদ ইত্যাদি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। তো সম্মানিত পাঠক আপনার যদি এমন প্রাসঙ্গিক পোস্ট পেতে চান তাহলে আমাদের সাইটটি ফলো করুন।
আরও দেখুন
১৫ আগস্ট সম্পর্কে রচনা | জাতীয় শোক দিবস রচনা
১৫ আগস্ট সম্পর্কে বক্তৃতা দেখে নিন